1. info@www.jawarbarta.com : জাউয়ার বার্তা :
  2. zubaerahmad85@gmail.com : জাউয়ার বার্তা : জাউয়ার বার্তা
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বড়কাপন গ্রামে অসহায় পরিবারকে “ফ্রেন্ড পরিবার”-এর ১৫ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরির বিক্রয় দরপত্রে সর্বোচ্চ দরদাতার পে–অর্ডার জালিয়াতি জাউয়া বাজার ইউনিয়নের মুলতান পুর গ্রামে কিশোর নিখোঁজ: গাঙ্গে সাতার কাটতে গিয়ে ডুবে যায় ছাতকে ৬দিন ব্যাপী কৃষি মেলার উদ্বোধন লক্ষ্মীসোম টু ভাতগাঁও রাস্তায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ, বর্ষায় আরও বিপদ আশঙ্কা এলাকাবাসীর জরুরি সংস্কারের জোর দাবি ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ ৫নং জাউয়া বাজার ইউনিয়ন কমিটি গঠিত ছাতকের জাউয়া বাজারে জমিয়তের নতুন কার্যালয় উদ্বোধন ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন আবু আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত সংঘর্ষে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি: উদ্বিগ্ন বিশ্ব সম্প্রদায় যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা শেষে ঢাকায় ফিরলেন খালেদা জিয়া

এক নির্ভীক সৈনিকের গল্প, ও একটি আরজ- উবাইদুর রহমান হুযাইফী

  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ১০৯ বার পড়া হয়েছে

এক নির্ভীক সৈনিকের গল্প, ও একটি আরজ
-উবাইদুর রহমান হুযাইফী

আল্লাহ তায়া’লা দুনিয়াতে তাঁর মাহবুব বান্দাদেরকে এই জন্যই মুসিবত দ্বারা গ্রাস করেন; যেন সেই বান্দার দুনিয়ার কোনো ভুলত্রুটির কারণে ময়দানে মাহশারে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে না হয়, তাইতো রব তাঁর জান্নাতের মেহমান বানানোর আগে তাদেরকে পাক-সাফ করা আরম্ভ করেন। এই জন্যই হুজুর সা. বলেন,

من يُرِدِ اللهُ به خيرًا يُصَبْ منه

আল্লাহ তায়া’লা যার কল্যাণ চান তাকেই মুসিবত দেন।
সুতরাং আল্লাহ পাকের নিয়মই যেহেতু এটা, তাই সমস্ত বিপদ-আপদে সর্বোচ্চ ধৈর্য্য ধারণ করার চেষ্টা করা উচিৎ। কিন্তু রাব্বে কা’বা! আপনি এমন কোনো পরীক্ষায় আমাদেরকে ফেলবেন না যেই পরীক্ষায় আমরা নিরাশ হয়ে পড়ি।

বিগত ১০ বছরে আমাদের আকাবিরদের মাঝে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন যারা তার মাঝে অন্যতম রাহবারে হক্ব আল্লামা আব্দুল হামীদ পীর সাহেব মধুপুর হাফি.। হযরতের জীবনে এতো বড় বড় মুসিবত এসেছে যা অন্য কারো উপর আসলে তার জন্য হক্বের উপর টিকে থাকাটা অসম্ভবপর হয়ে যেতো। যেমন……

(১) এই বৃদ্ধ বয়সে খু’নি হা”সি’ না কর্তৃক গু”লিবিদ্ধ হয়েছেন। আজও একটা গু”লি চোখের নিচে আটকে আছে।

(২) টসটসে নওজোয়ান চারজন সন্তানকে চোখের সামনে জেলে নিয়ে জালিমের জিন্দানখানায় নিষ্পেষিত করা হলো। আপনি ভাবেন তো আপনার কলিজার টুকরো নয়নের মনিকে কেউ অপহরণ করে নিয়ে গেলে আপনার কেমন লাগতো? একটু চোখ বুঝে কল্পনা করুন তো? মা বাবার কাছে সন্তান সন্তানই, ছোট হলেও যেই ভালোবাসা, বড় হলেও একই ভালোবাসা। আমার বাবাজান রহ. কোনোদিন রাতে ঘুমাতে পারতেন না আমি যতক্ষণ গাড়িতে থাকতাম, এই কারণে আমি অনেক রাগও করতাম আব্বুকে। যেই সন্তান গাড়িতে থাকায় মা বাবার ঘুম হারাম হয়ে যেতো সেই বাবা বছরের পর বছর এই কষ্ট কীভাবে সহ্য করলেন? তাও একজন নয় চারজন।

(৩) চার ছেলে তো জেলে আছেই, হুজুরের বড় সাহেবজাদা হলেন উস্তাযে মুহতারাম মাওলানা Abu Ammar Abdullah হাফি., উনার পরিস্থিতি তো ছিলো আরো ভয়াবহ, হুজুরের বড় ছেলে প্রায় ২ বছর আত্মগোপনে ছিলেন, এ-যেন আরেক যন্ত্রণা। জেলে গেলেও তো তাও একেরপর এক আপডেট জানার সুরত ছিলো। কিন্তু আত্মগোপনে থাকাকালীন এগুলো জানা প্রায় অসম্ভবপর ব্যাপার ছিলো। কারণ মোবাইলে কথা বললেই নেটওয়ার্ক থেকে ট্রাক করে বের করে ফেলা সম্ভব হয়ে যেতো। এ-যেন ছিলো বুকে উত্তপ্ত গরম পাথর চাপা যন্ত্রণা থেকেও বেশি যন্ত্রণা।

(৪) অন্যদিকে আন্দলোনের কারণে মধুপুর এলাকার প্রায় ৬০০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অজ্ঞাতনামা মামলা, প্রায় প্রতিটি পরিবার হুজুরকে যেয়ে প্রতিনিয়ত চাপ দিতে লাগলো। হুজুরের ব্যাথা শুনবে কে? এমনেই তো হার্টে রিং পড়ানো, উল্টো পুরো এলাকার চাপ সহ্য করতে করতে যেন হার্ট অ্যাটাক করার মত অবস্থা। আহ! তখন কী পরীক্ষার সম্মুখীন যে হতে হয়েছিলো?

(৫) এদিক দিয়ে তো আওয়ামী ফ্যা”সিস্ট অতর্কিত হামলার জন্য ওৎ পেতে থাকতো। প্রায় দু’ একদিন পর পরই হুজুরের মাদ্রাসা ও বাড়িতে হামলা করার জন্য শতাধিক পুলিশ, সেনাবাহিনীর গাড়ি ঢুকে পড়তো, আর হুজুরকে মেরে ফেলা বা গ্রেফতারের হুমকি তো ছিলোই, সেই মুহূর্তে সৈয়দপুর-মধুপুরের প্রতিটি মাইক দিয়ে “হাইয়া আলাল জি”হা দে” ‘র ধ্বনি ভেসে আসতো। উফফ! লোম হর্ষক সেই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে হুজুরকে নাস্তানাবুদ করাই ছিলো বাতিলের মূল টার্গেট।

(৬) সন্তানদেরকে বাঁচাতে বয়োজ্যেষ্ঠ বাবা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝ দিয়ে ভবঘুরের মত বাংলার একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটতে লাগলেন, টাকা-পয়সা জায়গা জমি যা ছিলো সর্বস্ব হারানো আরম্ভ করলেন সন্তানদের মামলার জন্য টাকা দিতে দিতে, মামলার কারনে বে-হিসেব টাকা-পয়সা ব্যয় হওয়ায় পরিবারের বাজার সদাইও সব কিছু ফুরিয়ে এসেছে। চরম প্রতিকূল পরিস্থিতির মাঝে পাঁচ সন্তানের পরিবার ও নিজের পরিবারের কঠিন অভাব নেমে আসলো। চাল কিনার মত পয়সাটুকু ফুরিয়ে এলো সকলের ঘরে৷ জানিনা নাতিদের চেহারার দিকে তাকে এই বয়োজ্যেষ্ঠ দাদা কীভাবে এগুলো সহ্য করেছিলেন?

(৭) এরই মাঝে হযরতের সারাজীবনের কষ্টার্জিত ফসল, র’ক্ত ঘামে তিলেতিলে গড়ে তোলা জামিয়া, সেই মাদ্রাসা নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হলো, এই বিষয়টা ভাবলে হুজুর এতটা বেশি কষ্ট পেতেন যে, পুরো দুনিয়া চলেও হুজুর এতটা বেশি কষ্ট পেতেন না, কারন এটাই যে হুজুরের শেষ সম্বল।

(৮) অন্যদিকে মাদ্রাসার বোর্ডিংয়েও নেমে এলো চরম দুর্ভিক্ষ ও অভাব। অবশেষে আল্লাহর রহমত, হযরতের দুয়া, ছাত্র ও এলাকাবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আল্লাহ তায়া’লা কুদরতিভাবে মাদ্রাসাকে হেফাজত করলেন। আলহামদুলিল্লাহ ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ, এই কঠিন যু’লুম আর অত্যাচারের স্টিমরোলার চালানোর পরও হযরত ঈমানের রাস্তা থেকে নূন্যতম পিছ-পা হলেন না। পাথরের মত শক্ত রাখলেন নিজেকে, মালিক কষ্ট পাবে এমন কোনো সাধারণ কাজও হযরত করার চিন্তাটুকু করলেন না। আলহামদুলিল্লাহ, গর্বের সাথে বলতেই পারি, আমরা শাইখুল হিন্দকে পাইনি, পেয়েছি হক্বের পক্ষে এক নির্ভীক লড়াকু সৈনিক আল্লামা আব্দুল হামীদ পীর সাহেব হুজুরকে। এমন আকাবীর তো যুগে একজনই মিলে।

[[অবশেষে ফ্যাসিস্ট খু’নির বিদায় হলো। আমরা সকলেই তো স্বাভাবিক স্বাধীন জীবনে ফিরে আসা শুরু করেছিলাম, কিন্তু হুজুরের উপর থেকে যেন মুসিবত গেলোই না]]

(৯) মামলার জন্য যেই টাকা পয়সা গিয়েছিলো সেগুলোর ঋণ থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনের তাগীদে হযরত একটি গাড়ি ক্রয় করলেন, একেবারেই শো-রুম থেকে নেওয়া, কিনতে না কিনতেই মাধবপুরে মারাত্মক ডাকাতের কবলে পড়লেন, গাড়িটি ভাংচুর করা হলো, গাড়ির চেয়ে বড় বিষয় হলো ‘ডাকাত যখন হামলা করে তখন স্বাভাবিক মানুষই অনেক সময় হার্ট অ্যাটাক করে থাকে, আর হুজুরের হার্টে তো ছিলো রিং পড়ানো, একটু বুঝুন হার্টের রুগীর জন্য বিষয়গুলো কতটা ভয়ানক।

(১০) গাড়িটি ঠিক করালেন এইতো কিছুদিন হলো, এরই মাঝে এক বিশাল ভয়াবহ দুর্ঘটনার স্বীকার, হাতের কব্জির হাড়, বুকের হাড়, চেহারার হাড়, মাড়ির হাড়, বেশ কয়েকটা দাঁত, সবগুলোই ভেঙ্গে গিয়েছে।

(১১) নতুন গাড়িটিও ৩০% ভেঙ্গে চুরমার হয়ে পড়ে আছে।

ও রব্বে কা’বা! তুমি এমন কোনো পরীক্ষায় ফেলো না যেই পরীক্ষায় আমরা সফল হতে পারবো না! এমন কোনো পরীক্ষায় ফেলো না যে, আ”গুনে পুড়িয়ে লাল করা লোহার পেরেক হয়ে শক্ত কাঁটার মত গলায় বিদ্ধ থাকবে।

সবিশেষ আপনাদের হাতজোড় করে অনুরোধ করি, আপনি যদি মনে করেন হযরতের মত নির্ভীক সৈনিক আমাদের জন্য দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকা প্রয়োজন তবে সকলেই যার যার জায়গা থেকে হযরত হায়াতে তায়্যিবার জন্য খুব দুয়া করুন! ওয়ায়েজরা মাহফিলে দুয়া করুন! ইমামরা মসজিদে দুয়া করুন! উস্তাযরা ছাত্রদেরকে নিয়ে দুয়া করুন! এছাড়া যারা আছেন কমপক্ষে এককভাবে দুয়া করুন! কারণ, আমরা প্রায় মুরব্বী শূন্য, ইসলামকে হেফাজতের জন্য এমন মুরব্বী আমাদের অনেক প্রয়োজন। মুনাসিব মনে করলে লেখাটি আপনিও শেয়ার করতে পারেন, আরেকজন ভাইও যেন দুয়া করতে পারেন। কষ্ট করে পড়ার জন্য জাযাকাল্লাহ প্রিয় কলিজার টুকরো ভাই।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত জাউয়া'র বার্তা-২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট